Monday, July 22, 2013

আমার কষ্টের কিছু বিবরণ (life story part 4)

যখন পারিবারিক ভাবে সব ঠিক হয়ে গেলো তার কিছুদিন পর থেকেই সব বদলে গেলো।
কারনে অকারনে আমার সাথে রাগ দেখাতে থাকলো। আমার বিন্দু পরিমাণ ভুল হলেও মাফ ছিলো না। এসব নিয়ে অনেক সময় আমার সাথে ঝগড়া পর্যন্ত হয়েছে। কিন্তু কেউ কখনো দেখেনি দোষ কার। সবসময় আমার মাফ চাইতে হয়েছে। এটা আমি মেনে নিয়েছি যে আমি ছোট তাই আমার ভুল না থাকলেও আমারি মাফ চাইতে হবে।

সেই সময়ের পর থেকে এখন পর্যন্ত যা কষ্ট আমি নিরবে সহ্য করেছি তা সব বর্ণনা করলে আমার এই লিখা ১ মাসেও শেষ হবে না। শুধু কিছু কথা তুলে ধরছি।

★ছোট বেলা থেকেই আমি খাবার নিয়ে খেতে পারতাম না। একদিন দুপুরে বাসায় এসে দেখি দিপা শুয়ে আছে। আমি বললাম আমি খাব। সে বলল নিয়ে খেতে, আমি বললাম তুমি তো জান আমি নিতে পারিনা। তারপর আমাকে অনেক বকা দিলো, বলল যে সে আমার চাকর না, আমার জন্য সে উঠতে পারবে না। আমার জন্য সে তার সংসার এ সুখি হতে পারে নাই। এসব শুনে আমি শুধু এটুকু বললাম যে আমার কপাল টাই খারাপ বলে খাবার নিতে গেলাম। খাবার নেয়ার সময় ঢাকনা পরে গিয়েছিলো এবং সে এই শব্দ শুনে চিল্লায়ে বলল যে ভালো মানুষের মত আচরন করতে। আমি বললাম যে আমি ভালো মানুষের মতই আচরন করি, এটা বলে প্লেট নিয়ে টেবিল এ বসলাম খাওয়ার জন্য। সে উঠে এসে আমার মাথায় ঘুশি মারলো। আর এটা তৈমুর কাকার বউ দেখেছে। সে আমাকে মেরে পরে বলে আমি নাকি তার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছি। আমি নাকি তাকে গালি দিয়েছি। আমি সেদিন অনেক কেঁদেছি। বাবা বাসায় এসে আমাকেই দোষ দিল।

★ প্রতিটা ঈদ এ কোন না কোন কারনে সে আমার সাথে ঝগড়া করবেইআর প্রতি ঈদ এ সে বলে যে আমার জন্য সে একটা ঈদ নাকি শান্তিতে করতে পারে নাই।

জয় মামার বাসায় একদিন তাদের এক বয়স্ক গেস্ট এসেছিলেন। তখন আমিও সেখানে ছিলাম। তিনি দিপা কে প্রশ্ন করলেন তার কয় ছেলে মেয়ে। অভ্র তখন আমার হাত ধরে দাড়িয়ে আছে। সে অভ্র কে তার কাছে নিয়ে বলল আমার এই একটাই ছেলে। আমি পাশে দাড়ানো ছিলাম। কষ্ট পেয়েছি কিন্তু কখনো কাউকে কিছুই বলি নাই।

★ আমি কখনো নিজের জন্য জামা কাপড় কিনতে পারি না। তাই আমার তেমন একটা জামা নাই। যদি কখনো বাবা বা তার সামনে এই কথা টা তুলি তাহলে ২ জনেই আমাকে বলত তুমি না কিনলে আমরা কি করব? তারা তো ঠিকি জানতো যে আমি কিনতে পারি না।

★ খাবার নিয়েও অনেক কষ্ট করেছি কিন্তু এসবের পিছনে আমার ব্যক্তিগত কিছু যুক্তি আছে তাই এই ব্যপারে কিছু বললাম না।

একদিন ঢাকা থেকে গেস্ট আসলো। তখন দিপা আমাকে বলল যে আমাকে গাড়ির গ্যাস ভরতে এবং তাদের নিয়ে ঘুরতে। আমার কাছে টাকা ছিলোনা। আমি বললাম যেই গ্যাস আছে এখন ঘুরা যাবে। ঘুরে এসে আমি গ্যাস ভরে দিবো। ঘুরে আসার পর আমার এক ফ্রেন্ড এর কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে সন্ধায় নরসিংদী থেকে গ্যাস নিয়ে আসলামআসার পর আমার সাথে খারাপ ব্যবহার শুরু করলো কেন তাকে না জানিয়ে গেলাম। আসলে অযথাই অযুহাত বের করত ঝগড়া করার জন্য

★ ২০১২ সালের ঈদ এ বাবার বাইক নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলাম। বাসায় আসার পর শুনি এটা নিয়ে অনেক ঝগড়া।

একদিন সকালে আপুর নানু বাড়িতে গিয়েছিলাম বাবার গাড়ি নিয়ে। বাসায় এসে দেখি তুলকালাম অবস্থা। আমরা গাড়ি নিয়ে গিয়েছি বলে সে ব্যাগ গুছিয়ে ঢাকা চলে গেল।

★ ঘুড্ডু মামার ছেলে, মেয়ে মানে আমার মামাতো ভাই বোন তারা একবার এখানে বেড়াতে এসেছিলো। তখন কি একটা বিষয় নিয়ে জানি আমার সাথে ঝগড়া শুরু করলো। একপর্যায় আমাকে বলল বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে। আমি বললাম আমি কেন যাবো এটা আমার বাবার বাড়ি। তখন সে বলল তাহলে কি আমি চলে যাবো? আমি বললাম এটা তোমার শশুর বাড়ি, এখানে আমার যেমন অধিকার আছে তোমারো তেমনি অধিকার আছে। আর তুমি যাবা নাকি থাকবা এটা তোমার ব্যক্তিগত ব্যপার। তারপর সে বাবা এবং সবাই কে কল করে বলল যে আমি নাকি তাকে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলেছি। পরের দিন চিনি কাকা আসার পর সে রেডি হলো চলে যাবে। তখন আমি কাকা কে শুধু এটুকুই বললাম যে এখানে তো ২ টা বাচ্চা মানুষ সামনে আছে এবং তারা দিপার ভাই এর ছেলে মেয়ে। তাদের সামনেই তো সব হলো, তাদের জিগ্যেস করা হোক, তারা যদি বলে যে আমি এই কথা বলেছি তাহলে আমি এখনি বাড়ি ছেড়ে চলে যাবো। কিন্তু তারা কিছুই বললো না। ভয়ের কাছে সত্যি  হেরে গেল। আমি কথা টা বলি নাই, তারপরেও আমি পায়ে ধরে মাফ চেয়েছি।

★ বাবা যখন apollo তে ভর্তি তখন একদিন রাতে আমি জয় মামার বাসায়। কি একটা বিষয় নিয়ে ফোনে আমার সাথে ঝগড়া করলো। বাসায় এসে আমাকে ছাদে পেল, তখন অনেক গালি দিয়ে বলল এখনি এই বাসা থেকে বের হয়ে যেতে। এবং সত্যি বের করে দিয়েছিলো। আমার কাছে তখন কোন টাকা নাই। আমি হেটে রামপুরা থেকে এপোলো হস্পিটাল পর্যন্ত গিয়ে সারারাত waiting room বসে কেঁদেছি। কাউকে কিছুই বলি নাই।

★ কিছুদিন আগে যখন চিনিকাকা রা সবাই আসলো, তারপর তারা যেদিন যাবে সেদিন তারা বাস এর জন্য আমাদের বাড়ির রাস্তার মাথায় দাড়িয়ে আছে। আর আমি হাসপাতাল থেকে যেই বাসায় ভাড়া থাকি সেই বাসায় যাচ্ছি। আমাদের বাড়ির রাস্তার আগে একটা রাস্তা আছে টাওয়ার এর পাশ দিয়ে, আমি ওই রাস্তার মাথায় আসার পর দেখি অভ্র সাইকেল নিয়ে দাড়িয়ে আছে, সাথে শুপ্তি। তো আমি এই রাস্তার মাথায় দাড়িয়ে অভ্র কে অনেক ডাকলাম কিন্তু সে আসলো না। তারপর যখন আমি বাসার দিকে রওনা হলাম তখন অনেকটা আসার পর দেখি শুপ্তি আমাকে ডাকছে। দেখি সে অভ্র কে নিয়ে আসছে। কাছে আসার পর আমি অভ্রর মাথায় হাত বুলিয়ে জিগ্যেস করলাম যে আমি ডাকলাম তুমি আসলানা কেন? অভ্র বলল তোমার সাথে কথা বললে আম্মা আমাকে মাইর দেয়। আমাকে না করেছে তোমার সাথে কথা বলতে। কষ্টে বুক টা ফেটে গিয়েছিলো কিন্তু কিছুই বলার ছিলো না।

দিপা ঢাকা যাওয়ার আগের দিন আমার সাথে দেখা করতে চাইলো, হাসপাতালের সামনে দেখা করলামতখন তাকে বললাম অভ্র আমার সাথে কথা বলুক বা মিশুক এটা যদি না চাও তাহলে আমাকে বল। তাকে মার কেন?
সে বলল এমন কিছুই হয় নাই। তখন আমি তার সামনে আবার অভ্র কে জিগ্যেস করলাম যে আমার সাথে দেখা করতে বা কথা বলতে কি কেউ না করেছে, তখন অভ্র বলেছে যে আম্মা না করেছে। তোমার সাথে কথা বললেই আমাকে মারে। তারপর দিপা চুপ হয়ে গেলো।

শেয়ার করা যায় এমন কিছু ঘটনা এখানে লিখলাম। আরো এমন অনেক কিছু আছে যা লিখা যায় না।

Ayesha afroj Barno, Deepa zaman, real life story, Sakline jahangir shapan, Stefun jahangir Carzon

0 comments:

Post a Comment

 

© 2011 A real love story and A real painful life story - Designed by Mukund | ToS | Privacy Policy | Sitemap

About Us | Contact Us | Write For Us