Monday, July 15, 2013

বাবার সুখের মাঝে নিজের সুখের সন্ধান করছি (life story part 1)

আমার মা'র সাথে যখন আমার বাবার ডিভোর্স হয়ে গেলো সেদিন আমি বাবার হাত ধরে বেরিয়ে এসেছিলাম। যদিও আসার কোন কারন ছিলো না, বাবা এক কাপড়ে বেরিয়ে এসেছে আর আমার মার কাছে টাকা পয়সা আমার আদর সবই ছিলো। (বাবার হাত ধরে আসার আগের রাত পর্যন্ত আমি আমার মার গায়ে পা না দিয়ে ঘুমাতে পারতাম না। এই জন্য সবসময় আমি আমার মার সাথে থাকতাম। বাবার আদর সেই সময় আমি খুব কমই পেয়েছি।) তারপরেও আমি বাবার হাত ধরে বের হয়েছি কারন তখন আমার বাবার কিছুই ছিলো না কিন্তু আমার মার কাছে অর্থ সম্পদ আছে। আমি শুধু এটুকু ভেবেছিলাম যে বাবার পাশে থাকার মত কেউ নাই আমি ছাড়া। এরপর আমরা ছিলাম বন্ধুর মততখন আমি ক্লাস এইট এর শেষের দিকে পড়ি। এমন সময়ও পার করেছি যে আমরা ২ জন একটা ডিম দিয়ে ভাত খেয়েছি।

সেই সময়ের একটা কথা খুব উল্লেখ করতে ইচ্ছা করছে।
বাবা একদিন আমাকে কিছু টাকা দিয়ে বলল যে তোমার স্যান্ডেল তো ছিঁড়ে গেছে, এক জোড়া স্যান্ডেল কিনে নিয়ে আস। আমি কিনে নিয়ে আসলামআনার পর বাবা কে বললাম দেখ ঠিক আছে কিনা।
(বাবা আর আমার পায়ের সাইজ সমান)
বাবা পরে বলল সুন্দর হয়েছে। সেই মুহূর্তে আমি খেয়াল করলাম আমার পুরান স্যান্ডেল থেকে বাবার টা দিগুণ বেশী ছেড়া। তখন আর কিছু না বলে বিকালে আমি বাবা কে বললাম, নতুন স্যান্ডেল  টা তে আমার পা ছিলে যাচ্ছে তুমি কয়েকদিন পড় তারপর আমাকে দিও। এটা করার কারন ছিল বাবা ছেড়া স্যান্ডেল পড়ে ঘুরবে আর আমি নতুন টা পড়বো? এটা আমার সহ্য হয়নি।
সেই সময় টা আমরা এতোটা ফ্রেন্ডলি ছিলাম।

তারপর একসময় আমার ফুপু এবং চাচারা ঠিক করলো বাবা কে বিয়ে করাতে হবে, কারন বাবার একা এই সংসার এ সব ম্যানেজ করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু তখন আমি এটা জানতাম না। তারা একজনকে ঠিক করলো। তখন আমি ঢাকায় আমার ছোট ফুপুর বাসায়। একদিন বাবা আপুর নাম্বার এ কল দিয়ে কথা বলে আমার সাথে কথা বলতে চাইলো। আমি ফোন টা কানে নিয়ে হ্যালো বলার সাথে সাথেই বাবা জিগ্যেস করলো যে তোমরা নাকি আমার জন্য বিয়ের ব্যবস্থা করছ? আমি বোকার মত আপুর দিকে তাকালাম। আপু ইশারা দিয়ে বুঝালো যাতে আমি হ্যা বলি। আমি তখন বাবাকে বললাম যে হ্যা আমরা ঠিক করতেছি। খুব কষ্ট লেগেছিলো কিন্তু কাউকে কিছুই বলি নাই। এদিকে আমার বড় ফুপু পেপারে পাত্রি চাই বিজ্ঞাপন দিলো। সেখান থেকে অনেক কল আসলো। বাবা এর মাঝে দিপা কে পছন্দ করলো। ফুপুরা যাকে পছন্দ করেছিলো তাকে বাবা বিয়ে করবে না বলে দিয়েছে। বাবা ঠিক করলো দিপা কে বিয়ে করবে। এটাতে আমার আপু, চাচা, ফুপু কেউ রাজি ছিলো না। কিন্তু বাবা দিপা কেই বিয়ে করবে। আর এই কারনে সবাই বাবার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলো। আমি এইসব ব্যাপারে বাবাকে কখনো কিছুই বলি নাই। দিপার ফ্যামিলি মনোহরদী এসে খোজ নিল। বাবা ঢাকায় তাদের বাসায় গেল। সবার সাথে কথা বলল এবং বাবার মোবাইল দিয়ে সবার ছবি তুলে আনলো। আমাকে ছবি দেখিয়ে সবার পরিচয় দিলো।

তখনি প্রথম আমি বর্ণ'র ছবি দেখি। বাচ্চাদের যত ছবি ছিলো তার মাঝে বর্ন কে আমার কাছে একটু অন্যরকম লেগেছিল। আমার এখনো মনে আছে সে স্কার্ট আর শার্ট পরা ছিলো

যাই হোক তারপর একদিন দিপা এবং বর্ণ'র বাবা মনোহরদী আসলো। আমি তখন বাইক নিয়ে অনেক দূরে এক জায়গায় গিয়েছিলাম। বাবা কল দিয়ে বলল তারা এসেছেন এবং আমি আসলে একসাথে সবাই খাবে। আমি আসলাম, তারা আমাকে কিছু প্রশ্ন করলো আমি উত্তর দিলাম। তারপর একসাথে খেলাম। খাওয়ার পর আমি আমার একটা কাজে চলে গেলাম তাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে।

এর কিছুদিন পর বিয়ের সব ফাইনাল। বাবা আমাকে বলল যে তারা বলেছে আমাকে নাকি যেতে হবে। আমি বললাম আমি যাবো। আর এই কারনে আমার আপু, চাচা, ফুপু তারাও আমার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিল। কিন্তু আমার কাছে বাবার সুখটাই সবসময় বড় ছিলো।

Deepa zaman, real life story, Sakline jahangir shapan

0 comments:

Post a Comment

 

© 2011 A real love story and A real painful life story - Designed by Mukund | ToS | Privacy Policy | Sitemap

About Us | Contact Us | Write For Us